মেনোপজঃ হতাশা কিংবা ভয় নয়
একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর এসে প্রতিটি নারীরই নিয়মিত মাসিক চক্র বা পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায়। সাধারণত ৪৫-৫৫ বছর বয়সের মধ্যে এটা ঘটে থাকে। সাধারণত টানা ১২ মাস যদি পিরিয়ড বন্ধ থাকে, তাহলে বুঝে নিতে হবে মাসিক বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
◼️ কেন হয় মেনোপজ?
জন্মের সময় মেয়েদের ডিম্বাশয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ ডিম্বাণু থাকে। পিরিয়ড শুরু হবার পর প্রতি মাসে ডিম্বাণু নিঃসৃত হয়। একটা বয়সে এসে ডিম্বাণু একেবারেই কমে যায়, ফলে নিয়মিত পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায়।
◼️ মেনোপজের লক্ষণ/ কী কী সমস্যা দেখা দেয়ঃ
১. শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে হালকা গরম তাপ বের হওয়া (Hot Flash)
২. রাতে ঘামা
৩. বুক ধড়ফড় করা
৪. অবসন্ন বোধ করা
৫. ক্লান্তি
৬. দুর্বলতা
৭. রাতে ঘুম না হওয়া
৮. প্রস্রাব ধরে রাখতে অক্ষমতা
৯. প্রস্রাব করার সময় ব্যথা
১০. ঘনঘন প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশান
১১. যোনিপথে অনিয়মিত রক্ত যাওয়া
১২. যোনিপথ শুকিয়ে যাওয়া
১৩. যৌনমিলনের সময় ব্যথা অনুভব করা
১৪. যোনিপথে চুলকানি
১৫. যোনিপথে সাদা স্রাব যাওয়া
১৬. যৌন আগ্রহ কমে যাওয়া
১৭. ত্বকের টানটান ভাব হ্রাস পাওয়া
১৮. ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া
১৯. উদ্বিগ্নতা
২০. মাথাব্যথা
২১. অল্পতে রেগে যাওয়া
২২. মাথা ঘোরানো
২১. হতাশাবোধ
২২. অল্পতে ভুলে যাওয়া
২৩. কোনোকিছুতে মনোযোগ দিতে সমস্যা হওয়া
২৪. হাড় ক্ষয়ে যাওয়া (মেনোপজের কারণে হাড়ের ক্যালসিয়াম কমতে থাকে। ফলে হাড় দুর্বল হয়ে যায়। অল্প আঘাতেই হাড় ভেঙে যেতে পারে। বেশিরভাগ নারীই এসময়ে কোমর ব্যথায় ভোগেন।)
২৫. হাড়ে ব্যথা
২৬. হাড় ভেঙে যাওয়া
২৭. হার্টের অসুখ
২৮. স্ট্রোক
◼️ ভালো থাকার জন্যে কী করা যায়?
মনে রাখতে হবে, এটা কোনো অসুখ না। এটা নারীজীবনের স্বাভাবিক একটা অধ্যায়। তাই একে ভয় না পেয়ে পজিটিভলি নিতে হবে। আর ভালো থাকার জন্যে কিছু উদ্যোগ নিতে হবে।
ক. পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধবের সাথে সুন্দর সময় কাটানোর চেষ্টা করতে হবে।
খ. পুষ্টিকর খাবার বেশি খেতে হবে। প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়া প্রয়োজন।
গ. ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে। ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি ওষুধ খেতে হবে।
ঘ. নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। তলপেট ও শ্রোণীদেশের মাংসপেশির ব্যায়াম করতে হবে।
ঙ. অতিরিক্ত গরম যেন না লাগে এমন কোনোকিছু করা থেকে বিরত থাকা।
চ. বিশ্রাম করা। এক্ষেত্রে দীর্ঘশ্বাস নেয়া এবং মাংসপেশি শিথিল করা বেশ ফলদায়ক।
ছ. প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি ও ফলমূল খেতে হবে। দুধ খেতে হয়।
জ. বেশি বেশি পানি খেতে হবে।
ঝ. ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে।
যাদের শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে হালকা গরম তাপ বের হওয়া (Hot Flash), রাতে ঘামা, হতাশা, ঘুমের সমস্যা ইত্যাদি দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে তাহলে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি নেয়া যেতে পারে। তবে এটা বেশ সময়সাপেক্ষ এবং খরচসাপেক্ষ প্রক্রিয়া। তাছাড়া এটা হৃদপিণ্ডের অসুখ, স্তন এবং জরায়ুর ক্যান্সার ইত্যাদির ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
------------------
◼️ লাইফস্প্রিং এর স্ত্রী ও প্রসূতিবিদ্যা বিশেষজ্ঞ ডা. এর অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে ও অন্যান্য তথ্য জানতে কল করুনঃ
09638 505505 অথবা 01763 438148 । ২৪ ঘন্টা যে কোনো সময়
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন