একজন অপরাধী মা বলছি..!!


 অভিমান করে এভাবে সন্তান ওয়াশ রুমের সমনে ঘুম

সকাল বেলা আজ জরুরী মিটিং , তাই রাসিনকে তড়িঘড়ি নাস্তা করিয়ে দিয়ে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি , কিন্তু রাসিন কিছুতেই আমাকে যেতে দিবেনা , পা ধরে আছে । যদিও এই কাজটা অনেক বেশি কঠিন , তবুও আমি তাকে ফাঁকি দিয়ে বের হয়ে যাই ওকে ওর নানুর কাছে রেখে , কাজের মেয়েটা যখন দরজা লাগাচ্ছে কানে আসছে আমার ছেলের কান্না , " মা আমায় নেয় নি " বুকের ভিতর চিনচিনে ব্যথা নিয়ে শুনেও না শোনার ভান করে নেমে গেলাম লিফট দিয়ে , এ যেন নিজেই নিজের মনকে বুঝ দেয়ার বৃথা আস্ফালন ! এরপর গাড়িতে আম্মুর ভিডিও কল পাই , ভিডিও তে যা দেখি — আমার ফেরেশতার মত রাসিন আমার ওড়না জড়িয়ে আমার ওয়াশরুমের সামনে মাটিতে শুয়ে আছে , আম্মু কান্না করছে ! আমাকে বকা দিচ্ছে ! আমার ভিতরটা হাহাকার করে উঠল ! আম্মু জানাল , আমি যাওয়ার পর রাসিন কোথাও থেকে আমার ব্যবহার করা এই ওড়নাটা বের করে এটার ঘ্রাণ নিচ্ছিল আর ফুপিয়ে ফুপিয়ে বলছিল , " মা আমায় নেয় নি " তখন ওকে বলল " মা টয়লেটে গেছে , তোমাকে নিয়ে যাবে বের হয়েই " এই কথা বলে আম্মু রাসিনের জন্য ফিডার আনতে কিচেনে যায় , কিছুক্ষণ পর এসে দেখে এই দৃশ্য ! আমি ওয়াশরুমে আছি জেনে সে দরজার সামনেই পাহারা দিতে দিতে ঘুমিয়ে পরে এই ভয়ে যে আবার ওকে মা ফেলে যায় কিনা ! ভিডিও কলে আম্মু বকা দিচ্ছিল ওকে কেন এত কষ্ট দেই আমি ! আমি নিশ্চুপ ! এরকম নিশ্চুপ আমাকে থাকতে হয় অনেক সময়েই , অনেক কর্মজীবি " মা " দের মতন ! মাঝেমাঝে ভাবি সব কাজ বাদ দিয়ে ওকে বুকে নিয়ে থাকি ! কিন্তু কর্মময় এই জীবনে আমারো আছে ছোট ছোট কিছু স্বপ্ন ! তাই প্রতিদিন আমার নিরন্তর যুদ্ধ চলে Motherhood + Work Life ব্যালেন্স করতে করতে , জানি না কতদিন পারব ! দোয়া করবেন সবাই আমার ছোট্ট রাসিনের জন্য , সেইসাথে আমার ছোট ছোট স্বপ্নগুলোর জন্য ! স্বপ্নের দিকে এই পথচলা মাঝেমাঝে ভীষণ কঠিন মনে হয় । 





ℹ️ জীবনে ব্যস্ততা, প্রতিদিনের নানা ঝামেলা ইত্যাদি থাকে। তার মধ্যেও যত্ন করে সন্তানের জন্য তুলে রাখুন কিছু চমৎকার মুহূর্ত।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে সন্তানকে নিয়ে বেড়াতে বের হোন। সময়ের সীমাবদ্ধতা থাকলে কাছে কোথাও ঘুরে আসুন। সন্তানের প্রিয় খাবার খেতে পারেন একসঙ্গে। দেখতে পারেন প্রিয় কোনো সিনেমা। সারা দিন একসঙ্গে থাকুন। নিজেদের মধ্যকার দূরত্ব দূর করে ঝালিয়ে নিন পারস্পরিক আন্তরিকতার সম্পর্ক।

শৈশবে মা-বাবা, দাদু-ফুপির কাছে গল্প শুনে আমরা ঘুমাতাম। রূপকথা রাজকন্য-রাজপুত্র, চাঁদের বুড়ি কিংবা ঠাকুমার ঝুলি ছিল আমাদের খুব প্রিয়। ঘুমের রাজ্যে আমরাও তখন হয়ে উঠতাম রূপকথার কোনো চরিত্র। আপনার সন্তান কি সেই আনন্দ পাচ্ছে? রাতে বিছানায় শুয়ে সন্তানকে গল্প শোনান। রূপকথা না হোক, অন্য কোনো গল্প হতে পারে। নিজের শৈশবের কথা, পুরোনো দিনের মানুষের কথা কিংবা হাল আমলে অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম–এর কাহিনিও হতে পারে। ঘুমিয়ে পড়ার আগে যেন সন্তান আপনার স্পর্শ পায়। এই ছোট্ট সময়টুকু সন্তানের জন্য মূল্যবান রসদ হয়ে ওঠবে। দৃঢ় হবে আপনাদের পারস্পরিক বন্ধন।

প্রযুক্তিনির্ভর বিনোদনে সন্তান অভ্যস্ত না হোক, খানিকটা মানবিক আর আন্তরিক থাকুক আপনার সন্তান। ঘরে ফেরা তার জন্য আনন্দ আর স্বস্তির হোক।


 © Tasnim Kabir

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভারতকে দিতে হবে ৮ কোটি টাকা

সমন্বয়কদের নাম ভাঙিয়ে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে দই ও মিষ্টি নেওয়াকে কেন্দ্র করে বিতর্ক

স্বাস্থ্য বীমা পরিকল্পনা